COMPUTER BASIC

নিজেকে জিজ্ঞাসা করো

  • কম্পিউটার কেনো শিখতে হবে?
  • কম্পিউটার শেখার প্রধান অন্তরায় কি?
  • তুমি এতোদিন কেনো কম্পিউটার শিখনি?
  • তোমার কি কম্পিউটার শিখতে ইচ্ছা করে? ইচ্ছে করলে কেনো ইচ্ছে করে?
  • কম্পিউটার শিখতে গেলে কি কি প্রয়োজন হয়?
  • বর্তমানে কম্পিউটার দিয়ে কি কি হচ্ছে?
  • আগামীতে নতুন নতুন কি কি প্রযুক্তি আসছে?

সিলেবাস (৩টি লেসন)

লেসন-১
1. কম্পিউটার কি?
2. কম্পিউটারের ইতিহাস
3. কম্পিউটারের শ্রেণিবিভাগ

লেসন-২
1. কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের বিভিন্ন অংশ
2. সফ্টওয়্যার ও ফার্মওয়্যার
3. সফ্টওয়্যার এর প্রকারেভেদ
4. মেমোরির প্রকারভেদ
5. প্রধান ও সহায়ক মেমোরি
6. র‍্যাম ও রমের মাঝে পার্থক্য
7. মেমোরির ক্ষমতা

লেসন-৩
1. কম্পিউটার সিকিউরিটি
2. উইন্ডোজ এর খুটিনাটি



কম্পিউটার কি?

Computer শব্দটি গ্রিক শব্দ Compute শব্দ থেকে এসেছে। Compute  শব্দের অর্থ গণনা করা। Computer শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। মূলতঃ এটি তৈরি করা হয়েছিল গণনার জন্য। কিন্তু বর্তমানে এটি জটিল ও কঠিন হিসাব-নিকাশ ছাড়াও আরো অনেক কাজে ব্যবহার হচ্ছে কম্পিউটার। কম্পিউটারের কাজের গতি হিসেব করা হয় ন্যানো সেকেন্ডে। ন্যানো সেকেন্ড হল এক সেকেন্ডের একশ কোটি ভাগের একভাগ। ইলেকট্রনিক প্রবাহের মাধ্যমে এটি তার যাবতীয় কার্য সম্পাদন করে।


কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্র ও কাজ

  • অফিস বেবস্থাপনা (In office Management)
  • শিল্প ক্ষেত্রে (In Industry Sector)
  • মুদ্রণ শিল্পে (In Printing Industry)
  • যোগাযোগ ব্যবস্থায় (In Communication)
  • চিকিৎসা ক্ষেত্রে (In Medical Sector)
  • গবেষণায় (In Research)
  • ব্যাংকিং জগতে (In Banking)
  • আদালত (In Court)
  • সামরিক ক্ষেত্রে (In Defence Sector)
  • অর্থবাজারে (In Billing System)
  • কৃষি ক্ষেত্রে (In Agriculture)
  • সংস্কৃতি ও বিনোদনে (In Cultures and Recreation)
  • তথ্য পরিসংখ্যানে (In Information Statistics)
  • ডিজাইনে (In Design)
  • আবহাওয়ার পূর্বাভাসে (In Weather Forecast)


কম্পিউটারের ইতিহাস

প্রাগৈতিহাসিক যুগে গণনার যন্ত্র উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রচেষ্টাকে কম্পিউটার ইতিহাস হিসেবে ধরা হয়। প্রাচীন কালে মানুষ একসময় সংখ্যা বুঝানোর জন্য ঝিনুক, নুড়ি, দড়ির গিট ইত্যাদি ব্যবহার করত। পরবর্তীতে গণনার কাজে বিভিন্ন কৌশল ও যন্ত্র ব্যবহার করে থাকলেও অ্যাবাকাস (Abacus) নামক একটি প্রাচীন গণনা যন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। এটি আবিষ্কৃত হয় খ্রিষ্টপূর্ব ২৪০০ সালে ব্যাবিলনে। অ্যাবাকাস ফ্রেমে সাজানো গুটির স্থান পরিবর্তন করে গননা করার যন্ত্র। খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০/৫০০ অব্দে মিশরে বা চীনে গননা যন্ত্র হিসেবে অ্যাবাকাস তৈরি হয়।

১৬১৬ সালে স্কটল্যান্ডের গণিতবিদ জন নেপিয়ার গণনার কাজে ছাপা বা দাগ কাটাকাটি অথবা দন্ড ব্যবহার করেন। এসব দন্ড জন নেপিয়ার (John Napier) এর অস্থি নামে পরিচিত। ১৬৪২ সালে ১৯ বছর বয়স্ক ফরাসি বিজ্ঞানী ব্লেইজ প্যাসকেল সর্বপ্রথম যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর আবিষ্কার করেন। তিনি দাঁতযুক্ত চাকা বা গিয়ারের সাহায্যে যোগ বিয়োগ করার পদ্ধতি চালু করেন। ১৬৭১ সালের জার্মান গণিতবিদ গটফ্রাইড ভন লিবনিজ প্যাসকেলের যন্ত্রের ভিত্তিতে চাকা ও দন্ড ব্যবহার করে গুণ ও ভাগের ক্ষমতাসম্পন্ন আরো উন্নত যান্ত্রিক ক্যালকুলেটর তৈরি করেন। তিনি যন্ত্রটির নাম দেন রিকোনিং যন্ত্র (Rechoning Mechine)। পরে ১৮২০ সালে টমাস ডি কোমার রিকোনিং যন্ত্রের পরিমার্জন করে লিবনিজের যন্ত্রকে জনপ্রিয় করে তোলেন।

উনিশ শতকের শুরুর দিকে আধুনিক একটি যন্ত্রের নির্মাণ ও ব্যবহারের ধারণা (যা কেবলমাত্র যান্ত্রিকভাবে, মানে যেকোনও রকম বুদ্ধিমত্তা ব্যতিরেকে, গাণিতিক হিসাব করতে পারে) প্রথম সোচ্চার ভাবে প্রচার করেন চার্লস ব্যাবেজ। তিনি এটির নাম দেন ডিফারেন্স ইন্জিন (Difference Engine)। এই ডিফারেন্স ইঞ্জিন নিয়ে কাজ করার সময় (১৮৩৩ সালে) তিনি অ্যানালিটিক্যাল ইন্জিন নামে আরও উন্নত ও সর্বজনীন একটি যন্ত্রে ধারনা লাভ করেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও অর্থের অভাবে কোনোটির কাজই তিনি শেষ করতে পারেননি।

কম্পিউটার বিজ্ঞানের সত্যিকার সূচনা হয় অ্যালান টুরিং এর প্রথমে তাত্ত্বিক ও পরে ব্যবহারিক গবেষণার মাধ্যমে। বিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশ ঘটতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবনের ফলে মাইক্রোকম্পিউটারের দ্রুত বিকাশ ঘটতে থাকে। বাজারে প্রচলিত হয় বিভিন্ন প্রকৃতি ও আকারের কম মূল্যের অনেক রকম পার্সোনাল কম্পিউটার (Personal Computer) বা পিসি (PC)। সে সঙ্গে উদ্ভাবিত হয়েছে অনেক রকম অপারেটিং সিস্টেমপ্রোগ্রামের ভাষা, অগণিত ব্যবহারিক প্যাকেজ প্রোগ্রাম। এরসাথে ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের এবং সংশ্লিষ্ট সেবা ও পরিসেবার। কম্পিউটার শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ও সম্প্রসারিত হয়েছে অসংখ্য প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক কম্পিউটার শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। সাম্প্রতিক কালে কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি (Information Technology) বা আইটি (IT) ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরাট অংশ দখল করেছে এবং কর্মসংস্থান হয়ে পড়েছে অনেকাংশেই কম্পিউটার নির্ভর।

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেল কর্পোরেশন ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসর উদ্ভাবন করার পর থেকে বাজারে আসতে শুরু করে মাইক্রোপ্রসেসর ভিত্তিক কম্পিউটার। তখন থেকে কম্পিউটারের আকৃতি ও কার্যক্ষমতায় এক বিরাট বিপ্লব সাধিত হয়। ১৯৮১ সালে বাজারে আসে আই.বি.এম কোম্পানির পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি। এর পর একের পর এক উদ্ভাবিত হতে থাকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসর এবং তৈরি হতে থাকে শক্তিশালী পিসি। আই.বি.এম কোম্পানি প্রথম থেকেই আই.বি.এম কমপ্যাটিবল কম্পিউটার (IBM compatible computer) তৈরির ক্ষেত্রে কোনো বাধা-নিষেধ না রাখায় এ ধরনের কম্পিউটারগুলির মূল্য ব্যাপকহারে হ্রাস পায় এবং এর ব্যবহারও ক্রমাগত বাড়তে থাকে। একই সময় আই.বি.এম কোম্পানির পাশাপাশি অ্যাপল কম্পিউটার ইনকর্পোরেট (Apple Computer Inc) তাদের উদ্ভাবিত অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ (Apple-Macintosh) কম্পিউটার বাজারে ছাড়ে। কিন্তু অ্যাপল কোম্পানি তাদের কমপ্যাটিবল কম্পিউটার তৈরির ক্ষেত্রে কোনোরূপ উদারতা প্রদর্শন না করায় ম্যাকিনটোশ কম্পিউটারের মূল্য থেকে যায় অত্যধিক বেশি, যার ফলে অ্যাপল তেমন জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারে নি। তবে বিশেষ ধরনের কিছু ব্যবহারিক সুবিধার কারণে মূলত মুদ্রণ শিল্পে অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো।


কম্পিউটার প্রজন্ম (Computer Generation)

কম্পিউটার যন্ত্রটি ক্রমঃবিবর্তন ও বিকাশ লাভের বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থায় এসেছে। কম্পিউটার যন্ত্রের এই বিবর্তন, পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং বিকাশের এক একটি ধাপ বা পর্যায়কে কম্পিউটারের প্রজন্ম বা জেনারেশন বলা হয়। কম্পিউটারের প্রজন্ম নিয়ে কিছুটা মতভেদ থাকলেও কম্পিউটারের যান্ত্রিক পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও উন্নয়নের ভিত্তিতে কম্পিউটারের প্রজন্ম কে ৫টি ভাগে ভাগ করা হয়। নিম্নে কম্পিউটার কম্পিউটারের প্রজন্ম সমূহ পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হল।

প্রথম প্রজন্ম (১৯৪০-১৯৫৬)

১৯৪০ থেকে ১৯৫৫ সালের মধ্যে যে সব কম্পিউটার তৈরি হয়েছে, সেগুলিকে বলা হয় প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটার। ঐ সব কম্পিউটারের গঠনতান্ত্রিক কাঠামোর মূল যন্ত্রাংশ ছিল ভ্যাকুয়াম টিউব।

প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারঃ এ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য কম্পিউটার হচ্ছে এবিসি (ABC), ইউনিভিক (UNIVAC) ও এনিয়াক (ENIAC) এর ওজন ছিল ৩০ টন। এতে ১৮০০ শত ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহৃত হয়। এটা চালাতে বিদ্যুৎ খরচ হত ২০০ কিলোওয়াট। ১৯৪৮ সালে ট্রানজিস্টর আবিষ্কার হয়।

বৈশিষ্ট্য সমূহ

  • ভ্যাকুয়াম টিউব ও বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক বর্তনীর ব্যবহার।
  • মেমরি হিসাবে ম্যাগনেটিক ড্রামের ব্যবহার।
  • ধীরগতিসম্পন্ন গণনাযন্ত্র।
  • আকারে অনেক বড়।
  • মেশিন ভাষার নির্দেশ প্রদান।
  • পাঞ্চকার্ড এর মাধ্যমে ইনপুট ও আউটপুট ব্যবস্থা।

উদাহরণ: IBM-650, MARK II, ENIAC, EDVAC, EDSAC.

দ্বিতীয় প্রজন্ম (১৯৫৬-১৯৬৩)

দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে ভ্যাকুয়াম টিউবের পরিবর্তে ট্রানজিস্টর এর ব্যবহার শুরু হয়। এই প্রজন্মের কম্পিউটার গুলির যন্ত্রাংশ ছিল আকারে তুলনামূলক ভাবে ছোট।

দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারঃ এ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য কম্পিউটার হচ্ছে আইবিএম-১৪০০, আইবিএম-৭০৯০, আরসিএল-৩০১ ও ৫০১ এবং আরসিএল-৩০০ ইত্যাদি।

বৈশিষ্ট্য সমূহ

  • ট্রানজিস্টরের ব্যবহার।
  • ম্যাগনেটিক কোর মেমরির ব্যবহার ও সহায়ক মেমরি হিসাবে ম্যাগনেটিক ডিস্কের উদ্ভাবন।
  • অধিক নির্ভরযোগ্যতা।
  • বাস্তবিক অর্থে কম্পিউটার ব্যবহার শুরু হয়।
  • টেলিফোন লাইন ব্যবহার করে ডাটা প্রেরণের ব্যবস্থা।
  • মেশিন ভাষার পরিবর্তে উচ্চস্তরের ভাষার ব্যবহার। (যেমন- COBOL, FORTRAN, ALGOL)
  • উচ্চগতিসম্পন্ন ও উন্নতমানের ইনপুট ও আউটপুট ব্যবস্থার প্রচলন।

উদাহরণ: IBM-1401, CDC 1604, RCA-301, RCA 501, BCR 300, GE 200, RCL 201.

তৃতীয় প্রজন্ম (১৯৬৪-১৯৭১)

ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (Integrated circuit) এর উন্নতি তৃতীয় প্রজন্মের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারে ট্রানজিস্টরের পরিবর্তে ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (আইসি) এর ব্যবহার শুরু হয়। এ প্রজন্মের কম্পিউটারে মনিটর, মেমরি ও প্রিন্টারের প্রচলন শুরু হয়।

৩য় প্রজন্মেই বাংলাদেশে কম্পিউটারের আবির্ভাব ঘটে। ১৯৬৪ সালে সর্বপ্রথম বাংলাদেশের পরমানু শক্তি কেন্দ্রে আইবিএম-১৬২০ নামের কম্পিউটার নিয়ে আসে।

বৈশিষ্ট্য সমূহ

  • কম্পিউটারে IC এর প্রচলন।
  • অর্ধপরিবাহী স্মৃতির ব্যবহার।
  • উচ্চতর ভাষার বহুল ব্যবহার।
  • মিনি কম্পিউটারের উদ্ভব।
  • আকৃতিতে ছোট, দাম তুলনামুলক কম এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি।
  • মুদ্রিত আকারে লাইন প্রিন্টারের ব্যবহার।
  • আউটপুট হিসেবে ভিডিও ডিসপ্লে ইউনিটের প্রচলন।

উদাহরণ: IBM 360, IBM 370, PDP-8, PDP-II, GE-600.

চতুর্থ প্রজন্ম (১৯৭১-বর্তমান)

মাইক্রোপ্রসেসর কম্পিউটারে সংযোজন চতুর্থ প্রজন্মের অন্যতম বৈশিষ্ট্য । এ প্রজন্মের কম্পিউটারের RAM, ROM, উচ্চ ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন Memory, Windows XP, Vista, Linux, Windows-7, Windows-10 ইত্যাদির উদ্ভব ঘটে ব্যাপক হারে। কম্পিউটারের সব সরঞ্জাম সিপিইউ এর মধ্যে সজ্জিত করা হয়ে থাকে । যেহেতু এই প্রজন্মের কম্পিউটারগুলো আরো ক্ষমতাসম্পন্ন হয়, তাই কম্পিউটারগুলো একটা আরেকটার সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। যেটা আধুনিক ইন্টারনেটের সূচনা করে দেয়। এ প্রজন্মে মাইক্রো কম্পিউটার (Micro Computer), সুপার কম্পিউটার (Super Computer) এর ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়।

বৈশিষ্ট্য সমূহ

  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার।
  • সুপার কম্পিউটারের উন্নয়ন।
  • বহু মাইক্রোপ্রসেসর এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ বিশিষ্ট IC এর ব্যবহার।
  • ট্রানজিস্টরগুলোতে অপটিক্যাল ফাইবারের ব্যবহার।
  • উন্নত মেমরি তথ্যা ম্যাগনেটিক বাবল মেমরির ব্যবহার।
  • মানুষের কন্ঠস্বরের মাধ্যমে প্রদত্ত নির্দেশের অনুধাবন।
  • ডাটা ধারণক্ষমতার ব্যাপক উন্নতি।
  • অত্যন্ত শক্তিশালী ও উচ্চগতিসম্পন্ন মাইক্রোপ্রসেসরের ব্যবহার।

উদাহরণ: IBM 3033, IBM 4300, IBM S/36, Sharp PC-1211, Apple II, Pentium 1-4.

পঞ্চম প্রজন্ম (আগামী দিনগুলি)

পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারগুলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence) অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এর উপর নির্ভর করে, যা এখন পর্যন্ত ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে। এ প্রজন্মের কম্পিউটারের কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, ভয়েস রিকগনিশন (Voice Recognition) সহ অন্যান্য বিষয় সংযোজিত থাকবে। যদিও বর্তমানে Voice Recognition এর মত অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহৃত হচ্ছে। পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটিং এর লক্ষ হচ্ছে এমন একটা ডিভাইস তৈরি করা যেটা Natural Language এর সাড়া দিতে পারবে।

বৈশিষ্ট্য সমূহ

  • কৃত্রিম বুদ্ধিসম্পন্ন।
  • তথ্য ধারণক্ষমতার ব্যাপক উন্নতি।
  • প্রোগ্রাম এর উন্নতি সাধন।
  • চুম্বক কোর স্মৃতির ব্যবহার।
  • বিপুল শক্তিসম্পন্ন সুপার কম্পিউটারের উন্নয়ন।
  • স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ, গ্রহণযোগ্য শব্দ দিয়ে কম্পিউটারের সাথে সংযোগ।
  • অধিক সমৃদ্ধশালী মাইক্রোপ্রসেসর।


কম্পিউটারের শ্রেণিবিভাগ

কাজের ধরন, প্রকৃতি ও ডাটা প্রসেসিং এর ভিত্তিতে কম্পিউটারকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

  1. অ্যানালগ কম্পিউটার (Analog Computer)
  2. ডিজিটাল কম্পিউটার (Digital Computer)
  3. হাইব্রিড কম্পিউটার (Hybrid Computer)

অ্যানালগ কম্পিউটার: Analogy ইংরেজি শব্দ থেকে Analog কথাটি এসেছে। অ্যানালক কথার অর্থ হচ্ছে সাদৃশ্য। চাপ, তাপ, তরল, প্রবাহ ইত্যাদি পরিবর্তনশীল ডাটার জন্য সৃষ্ট বৈদ্যুতিক তরল পরিমাপ করা অ্যানালগ কম্পিউটারের কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং সম্পাদিত ফলাফল মিটার বা কাঁটার সাহায্যে প্রকাশ করে। পেট্রোল পাম্পের জ্বালানি সরবরাহ ও মূল্য নির্ণয়ের কাজে, গাড়ি, উড়োজাহাজ, মহাকাশযান ইত্যাদির গতিবেগ পরিমাপের জন্য অ্যানালগ কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়।

ডিজিটাল কম্পিউটার: ডিজিটাল কম্পিউটার বর্ণ বা অংক সংকেতের মাধ্যমে তথ্যগ্রহণ করে থাকে এবং ফলাফল প্রকাশ করে। এই কম্পিউটার নির্ভুলভাবে গাণিতিক ও যুক্তিগত কাজ সম্পন্ন করে । এবং ০ ও 1 বাইনারী সংখ্যার উপর নির্ভর করে তথ্য বা উপাত্ত সংগ্রহ করে।

হাইব্রিড কম্পিউটার: হাইব্রিড কম্পিউটার হচ্ছে অ্যানালগ ও ডিজিটাল উভয় পদ্ধতির সমন্বয়। হাইব্রিড কম্পিউটারে উপাত্ত সংগৃহীত হয় অ্যানালগ প্রক্রিয়ায়। সংগৃহীত উপাত্ত সংখ্যায় রূপান্তর করে ডিজিটাল অংশে প্রেরণ করা হয়। ডিজিটাল অংশ প্রাপ্ত উপাত্তকে প্রক্রিয়াকরণের পর ফলাফল প্রদান করা হয়। হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) এ হাইব্রিড কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। রোগীর রক্তচাপ, শরীরের তাপ, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ইত্যাদি উপাত্ত অ্যানালগ অংশের সাহায্যে গ্রহণ করার পর উপাত্তগুলো ডিজিটালে রুপান্তরিত করে উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ করে রোগীর বর্তমান অবস্থা ফলাফল আকারে তুলে ধরা হয়। ক্ষেপনাস্ত্র, নভোযান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে জটিল সমস্যার সমাধান সম্ভব হয় এই ধরণের কম্পিউটার ব্যবহারে।

আকার ও ক্ষমতার ভিত্তিতে কম্পিউটার ৪ প্রকার।

(১) সুপার কম্পিউটার (Super computer)
(২) মেইনফ্রেম কম্পিউটার (Mainframe computer)
(৩) মিনি কম্পিউটার (Mini computer)
(৪) মাইক্রোকম্পিউটার (Micro computer)

সুপার কম্পিউটারঃ 

সবচেয়ে শক্তিশালী ও দ্রুতগতি সম্পন্ন কম্পিউটার হচ্ছে সুপার কম্পিউটার। এই কম্পিউটারের অনেক জটিল ও সূক্ষ্ম কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে। আকার-আকৃতি ও ক্ষমতার দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় কম্পিউটার হলো সুপার কম্পিউটার। মহাকাশ ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, নভোযান, জঙ্গি বিমান এবং ক্ষেপনাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কাজে সুপার কম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। কয়েকটি সুপার কম্পিউটারের উদাহরণ হলো- CRAY 1, supers xll, JAGUAR, NEBULAE, ROADRUNNER, KRAKEN, JUGENE, PLEIADES, TIANHE-1, Sunway Taihulight. 

মেইনফ্রেম কম্পিউটারঃ 

সুপার কম্পিউটার থেকে তুলনামূলক কম শক্তিশালী কম্পিউটার হচ্ছে মেইনফ্রেম কম্পিউটার। তবে সাধারণ কম্পিউটার থেকে মেইনফ্রেম কম্পিউটার অনেক শক্তিশালী এবং আকারে বড়। এই কম্পিউটার বাণিজ্যিক কাজে বেশী ব্যবহৃত হয়। ব্যাংক, বীমা ও বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে তথ্য আদান-প্রদান, সংরক্ষণ এবং গবেষণা কাজে মেইনফ্রেম কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে ব্যবহৃত মেইনফ্রেম কম্পিউটার হলো IBM 370, IBM 9100 and IBM 4341 ইত্যাদি।

মিনি কম্পিউটারঃ 

সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে মিনি কম্পিউটার আকারে বড়। মিনি কম্পিউটারে টার্মিনাল লাগিয়ে একসাথে প্রায় ৫০ জন ব্যবহার করতে পারে। এই কম্পিউটার শিল্প-বাণিজ্য ও গবেষণা কাজে ব্যবহৃত হয়। কয়েকটি মিনি কম্পিউটারের উদাহরণ হলো- ibms/36, pdp-11, ncrs/9290 ইত্যাদি।

মাইক্রো কম্পিউটারঃ 

আমরা যেসব কম্পিউটার ব্যবহার করি তা হলো মাইক্রো কম্পিউটার। মাইক্রো মানে ক্ষুদ্র বা ছোট। মাইক্রো কম্পিউটারের অন্য নাম  পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি(PC)। এতে থাকে  মাদার বোর্ড যাতে মাইক্রোপ্রসেসর, র‍্যাম, রম, ইত্যাদি থাকে এছাড়াও হার্ডডিস্ক , সিডি ড্রাইভ সহ অনেককিছু নিয়ে মাইক্রো কম্পিউটার গঠিত হয়।

মাইক্রোপ্রসেসরের উপর ভিত্তি করে মাইক্রোকম্পিউটারকে ২ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়-

(১) অ্যাপল কম্পিউটার (Apple Computer)
(২) আইবিএম কম্পিউটার (IBM Computer)

গঠন ও আকৃতিভেদে মাইক্রোকম্পিউটারকে কয়েক শ্রেণিতে ভাগ করা যেতে পারে-

(১) ডেস্কটপ কম্পিউটার (Desktop Computer): সচরাচর বাসা, অফিস, ব্যবসার কাছে যে সকল কম্পিউটার ব্যবহৃত হয় সেগুলো ডেস্কটপ কম্পিউটার হয়ে থাকে। সাধারণত এগুলো ডেস্কের উপর রেখে কাজ করা হয়।

(২) ল্যাপটপ কম্পিউটার (Laptop Computer): সাধারনত এ কম্পিউটার কোলের (Lap) উপর রেখে কাজ করা হয়। দেখতে অনেকটা ব্রিফকেস এর মতো। এটাকে সহকে বহন করা যায়।

(৩) পামটপ কম্পিউটার (Palmtop Computer): হাতের তালুতে (Palm) রেখে কাজ করার উপযোগি এই কম্পিউটার। দেখতে অনেকটা ক্যালকুলেটরের মতো এবং ক্ষমতায় তুলনামুলক কম।

(৪) নোটবুক কম্পিউটার (Notebook Computer): নোটবুকের মতে দেখতে আকারে তুলনামুলক ছোট এবং সহজে বহনযোগ্য এ কম্পিউটারটি অনেকটাই ল্যাপটপের মতো দেখতে।

(৫) পকেট কম্পিউটার (Pocket Computer): ছোট আকারের এ কম্পিউটারটি পকেটে রেখে বহন করা যায়।

 

মাইক্রোকম্পিউটার হার্ডওয়্যারের বিভিন্ন অংশ

হার্ডওয়্যার- যে সমস্ত যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ দিয়ে কম্পিউটার তৈরী এবং যেগুলো স্পর্শ করা যায় অর্থাৎ যার একটি শব্ত গঠন আছে সেগুলোই হার্ডওয়্যার। যেমন- কীবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার, মনিটর ইত্যাদি।

হার্ডওয়্যারের কয়েকটি অংশ-

(১) প্রধান মেমরি (Main Memory)
(২) গাণিতিক ও যৌক্তিক অংশ (Arithmetic & Logic Unit / ALU)
(৩) ইনপুট যন্ত্রাংশ (Input Device)
(৪) আউটপুট যন্ত্রাংশ (Output Device)
(৫) নিয়ন্ত্রণ ইউনিট (Control Unit)

সফটওয়্যার ও ফার্মওয়্যার

কম্পিউটারের ভাষায় তৈরী করা প্রোগ্রাম যেগুলো বিভিন্ন প্রকার গাণিতিক ও যৌক্তিক নির্দেশ গ্রহন করে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করে তাদেরকেই সফ্টওয়্যার বলে।

যেমন-  Windows, Word, Photoshop, Excel ইত্যাদি।

ফার্মওয়্যার- এটি এমন একটি প্রোগ্রাম, যাকে কম্পিউটার তৈরির সময় কম্পিউটারের মেমোরি রম-এ (ROM) স্থায়ী ভাবে সেট করে দেয়া হয়। কম্পিউটার চালু হবার সময় এদের ভেতরে দেয়া তথ্যগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে পদায় প্রদর্শন হয়।

সফ্টোয়্যার মুলত দুই ধরনের

(১) সিস্টেম সফ্টয়্যার (System Software/ Operating System): যে সব সফটওয়্যার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে পরিচালনা করার জন্য এবং এপ্লিকেশন সফটওয়্যারগুলোকে কাজ করার উপযোগী পরিবেশ তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয় সেগুলোই সিস্টেম সফটওয়্যার।

যেমন- Windows, Apple ইত্যাদি।

(২) অ্যাপ্লিকেশন সফ্টওয়্যার (Application Software): যে সফটওয়্যার ব্যবহারকারী প্রয়োজন বিবেচনা করে তৈরী করা হয় সেগুলোই অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। 

যেমন- Word, Excel ইত্যাদি।

মেমোরি

স্মৃতি বা তথ্য ধারন করে রাখার স্থান অথবা ডিভাইসকে মেমোরি বলে।

মেমরি সাধারণত দুই প্রকার-

(১) প্রধান মেমরি (Main memory / Primary memory)
        এটি দুই প্রকার-
        রেম (RAM- Random Access Memory),
        রম (ROM- Read Only Memory)

(২) সহায়ক মেমরি (Auxiliary memory / Secondary memory)

প্রাইমারি মেমরি ও সেকেন্ডারি মেমেরির মধ্যে পার্থক্য

প্রামাইরি মেমরি (Primary Memory)সেকেন্ডারি মেমরি (Secondary memory)
যে স্টোরেজ ডিভাইস এর প্রোগ্রাম সরাসরি মাইক্রোপ্রসেসর দ্বারা এক্সিকিউট হয় সে স্টোরেজ ডিভাইসকে প্রাইমারি/ যে সমস্ত স্টোরেজ ডিভাইস এর গতি ধীর এবং প্রচুর পরিমাণ ডাটা, ফাইল, প্রোগ্রাম জমা রাখা যায়, সে সমস্ত ডিভাইসকে সেকেন্ডারী মেমরি বলা হয়।
এই মেমরির সাথে এ.এল.ই (ALU) এর সরাসরি সংযোগ থাকে।এই মেমরির সাথে এ.এল.ইউ (ALU) এর সাথে সরাসরি সংযোগ থাকে না।
রেম (RAM) ও রম (ROM) হলো প্রাইমারি মেমরি।হার্ডডিস্ক, ফ্লপি ডিস্ক হলো সেকেন্ডারি মেমরি।

রেম ও রমের মধ্যে পার্থক্য

রেম (RAM)রম (ROM)
RAM এর পুর্ণরূপ Random Access MemoryROM এর পূর্ণরূপ Read Only Memory
RAM এর ডাটা রিড ও রাইট উভয়ই করা যায়।ROM এর তথ্য শুধু রিড করা যায়।
এটি একটি ভোলাটাইল মেমরি।এটি একটি নন-ভোলাটাইল মেমরি।
RAM কে অস্থায়ী মেমরি হিসাবে ব্যবহার করা হয়।ROM কে স্থায়ী মেমরি হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

 

মেমরি আকার সংক্রান্ত তথ্য (বিট-টেরাবাইট)

৮ বিট = ১ বাইট
১০২৪ বাইট             = ১ কিলোবাইট (KB)
১০২৪ কিলোবাইট    = ১ মেগাবাইট (MB)
১০২৪ মেগাবাইট      = ১ গিগাবাইট (GB)
১০২৪ গিগাবাইট      = ১ টেরাবাইট (TB)

 

কম্পিউটার সিকিউরিটি (এন্টিভাইরাস)

কম্পিউটার ভাইরাস কি?

কম্পিউটার ভাইরাস এমন একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই কম্পিউটারকে সংক্রমিত করে এবং আস্তে আস্তে পুরো কম্পিউটারে ছড়িয়ে যায় এবং কম্পিউটারের স্বাভাবিক কর্মকান্ডে বাধা সৃষ্টি করে। Worms, Trojans, Browser Hijackers, Overwrite Viruses, Malware, Spyware এগুলো বিভিন্ন ভাইরাসের নাম।

এন্টিভাইরাস

এন্টিভাইরাস হলো এক ধরনের প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারকে ভাইরাসমুক্ত করতে সাহায্য করে। Avast, Kaspersky ইত্যাদি এন্টিভাইরাসের নাম।


উইন্ডোজ এর খুটিনাটি

  • ডেস্কটপ পরিচিতি
  • ডেস্কটপ এর স্ক্রীন সম্পর্কে আলোচনা
  • ফাইল/ফোল্ডার কি?
  • ডিরেক্টরি/ফোল্ডার কি?
  • সফটওয়্যার ইনষ্টল/আনইনষ্টল
  • মাউস কিভাবে কাজ করে?
  • কিবোর্ড দিয়ে কিভাবে টাইপ করতে হয়

Comments

Popular posts from this blog

EXCEL

WORD

অফিস ম্যানেজমেন্ট কোর্স এর সিলেবাস